‘ঘোড়া দিয়ে লাঙল দিলে জমি গভীরভাবে খনন হয়’
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
১৬-০৩-২০২৫ ০৪:১৪:৪১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৬-০৩-২০২৫ ০৭:৪২:১৫ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার পলাশবাড়ী গ্রামে এক কৃষক গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষে চমক সৃষ্টি করেছেন। দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিমেলস সাইন্স বিভাগের অধ্যাপক ড, হারুন অর-রশীদ বলেন, মানুষের বাহন হিসেবে ঘোড়ার ব্যবহার নতুন নয়। আবার পণ্য বা মালামাল পরিবহনে ব্যবহার করা হয় ঘোড়ার গাড়ি। যদিও কালের পরিক্রমায় এগুলো এখন বিলুপ্তির পথে। কিন্তু ঘোড়া দিয়ে জমিতে হালচাষের দৃশ্য এখন দিনাজপুর জেলার সবগুলো উপজেলাতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আধুনিকতার এ যুগে বাস্তবেই ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক কৃষক । জেলার ১৩টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গ্রামগুলোতে গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার পলাশবাড়ী গ্রামের ইসাহাক আলীর পুত্র কৃষক ইসমাইল হোসেন (৪০) তার নিজের জমিতে গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষের কাজ করছেন। কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করে আসছি। আমি একজন স্বল্প আয়ের প্রান্তিক কৃষক। বর্তমান বাজারে গরুর দাম অনেক বেশি। এক জোড়া হালের গরু কিনতে গেলে খরচ পড়ে এক লাখ ৪০ হাজার থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ টাকা দিয়ে ৬ জোড়া ঘোড়া কেনা যায়। ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে এক জোড়া ঘোড়া কেনা যায়।
ওই কৃষক বলেন, আগে হালের গরু ছিল, এখন আর নেই। বাজারে গরুর দাম বেশি হওয়ায় অনেক কৃষকের হালের গরু কেনার সামর্থ্যও নেই। তাই নিজের চাষাবাদের প্রয়োজনে বাজার থেকে গরুর বদলে দু'টি ঘোড়া কিনেছি। শুধু নিজের জমিতে চাষাবাদ করছি না, অন্যের জমিতে টাকার বিনিময়ে জমি চাষ করে দিচ্ছি। এক বিঘা জমি চাষ দিতে নিচ্ছি ৫'শত টাকা। প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই বিঘা জমিতে হালচাষ করা যায়। প্রথম দিকে ঘোড়া গুলোকে হালের কসরত শেখাতে অনেক কষ্ট হয়েছে তার। ঘোড়ায় লাঙল-জোয়াল জুড়ে দিয়ে অনেকবার চেষ্টার পর ঘোড়া দু'টি হালচাষের আয়ত্তে আসে। এখন পুরোদমে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করছেন তিনি।
ঘোড়া দিয়ে হাল চাষের বিষয় অনেক কৃষক অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, ঘোড়া দিয়ে লাঙল দিলে জমি গভীরভাবে খনন হয়। পাওয়ারটিলার বা মাহেন্দ্র ট্রাক্টর গাড়ি দিয়ে হালচাষ করলে জমি সমান হয় না। তাই ঘোড়ার হাল দিয়ে জমি খুব সহজে সমান করা হয়।এতে জমির পানি ধরে রাখা সহজ হয়।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া বলেন, কৃষকেরা এখন যান্ত্রিক উপায়ে জমি চাষ করেন। ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করা অপ্রচলিত একটা বিষয়। সময়ের সঙ্গে ঘোড়ার যে ব্যবহার, তা উঠে গেছে। কৃষক ইসমাইল হোসেন নিজের প্রয়োজনে বাড়তি আয়ের জন্য ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ বা মই দেন। তবে কৃষি বিভাগ সব সময় আধুনিক মানের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে চাষাবাদের পরামর্শ দেয় বলে তিনি জানান ।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স